দীর্ঘ ১৫ বছরেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আবাসিক হলে খাবারের ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে আবাসিক হলগুলোতে তৈরি হওয়া পুষ্টিহীন খাবার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দোকানগুলোতে উচ্চমূল্যে খাবার খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
হল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মাসিক দায়িত্ব দিয়ে ডাইনিংগুলো পরিচালিত হয়। অনেক সময় মাসের মাঝামাঝিতে এসে বন্ধ হয়ে যায় এসব ডাইনিং। এছাড়া গত ২৭ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খোলা হলেও কাজী নজরুল ইসলাম হলে চালু হয়নি ডাইনিং।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাজী নজরুল ইসলাম হলে প্রভোস্ট না থাকায় ডাইনিংয়ের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারছে না হলটি। ফলে আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে এ হলের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাইনিংগুলোতে নামমাত্র খাবার দেয়া হয়। একই ধরনের খাবার প্রায় প্রতিদিন নিয়ম মাফিক চলতে থাকে। এসব খাবারে থাকে না তেমন পুষ্টিগুণ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হোটেলগুলোতে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার সাথে সাথে বাড়িয়ে দেয়া হয় খাবারের দাম। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলেও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়ায় আনসারদের অস্থায়ী ক্যাম্প থাকায় বন্ধ পড়ে আছে কাফেটেরিয়াটি। ফলে শিক্ষার্থীদেরকে খাবারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন হোটেলের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্যাতিত নারীদের সহায়তায় পুলিশের কিউআরটি
কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আজমির হোসেন বলেন, হলগুলো খোলার পরও আমাদের হলে ডাইনিং চলছে না যা ভোগান্তিকর। আবার অনেক হলে ডাইনিং চললেও খাবার তেমন সুবিধার না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুনজর কামনা করছি।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাঈমা নুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলের ডাইনিংয়ে ভর্তুকি প্রয়োজন । ভর্তুকি থাকলে আমরা আরও কম টাকায় আরও ভালো খাবার পেতে পারতাম।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ইউজিসিতে আমরা এ বিষয়ে বলেছি অনেকবার। কিন্তু ইউজিসি হলের ভর্তুকি বাবদ কোনও টাকা আমাদের প্রদান করে না। কিন্তু যেসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তুকি দিচ্ছে সেগুলো নিজস্ব আয় থেকে দেয়। কিন্তু আমাদের সেরকম আয় নেই।
নিজেদের আয় কিভাবে বাড়ানো যায় এমন চিন্তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আছে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভেতর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনেক মার্কেট থাকে, যেখান থেকে আয় হয়। আমাদের এরকম কোন মার্কেটও নেই। আমরা আশা করছি নতুন ক্যাম্পাস যেহেতু ২০০ একরের সেহেতু সেখানে এসব করা যায় কিনা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বড় হলে শিক্ষার্থীদের দেয়া বেতন থেকেও একটি অংশ তখন থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলে প্রভোস্ট না থাকা বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয় নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্তে উপনীত হবো এবং শিক্ষার্থীরাও হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে খাওয়া- দাওয়া করতে পারবে।
পড়ুন: মাটি সরে দেবে গেছে সেতু, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
যমুনার চরে ভেড়া পালনে শত শত নারীর স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন